HOMEOPATHY BLOG 2024

HOMEOPATHY BLOG 2024

পাইলসের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা

 পাইলসের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা

স্বাগতম বন্ধুরা!  পাইলস বা হেমোরয়েডস কি এবং জানবো কীভাবে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা এর সমাধান দিতে পারে পাইলস আমাদের দেশে একটি খুব সাধারণ সমস্যা, কিন্তু অনেকেই সঠিক চিকিৎসা পায় না।। তো চলুন, প্রথমে জানি পাইলস কী এবং এর কারণ কী!"

"পাইলস মূলত দুটি ধরনের হতে পারেইন্টার্নাল হেমোরয়েডস এবং এক্সটার্নাল হেমোরয়েডস

     ইন্টার্নাল হেমোরয়েডস   হয় মলদ্বারের ভিতরে এবং এতে সাধারণত রক্তক্ষরণ হয়, তবে তেমন ব্যথা থাকে না

     এক্সটার্নাল হেমোরয়েডস  হয় মলদ্বারের বাইরের দিকে এবং এই ধরনের পাইলসে সাধারণত প্রচণ্ড ব্যথা ফোলা লক্ষ্য করা যায়


External Hemorroids


এখন জানি পাইলস কেন হয়?

পাইলস হওয়ার প্রধান কারণ হলো মলদ্বারের রক্তনালীতে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হওয়া এবং এই চাপ সৃষ্টি বিভিন্ন কারনে হতে পারে

     কষা পায়খানা ফলে রেক্টামে প্রচণ্ড চাপ পড়ে পরবর্তীতে  পাইলস সৃষ্টি করে

     গর্ভাবস্থায় হরমোনাল পরিবর্তন, অতিরিক্ত ওজন এবং পেটের চাপ বৃদ্ধি পাইলসের কারণ হতে পারে

     অতিরিক্ত স্থূলতা বা একজায়গায় দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার কারণে পাইলসের ঝুঁকি বাড়তে পারে

     বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে রক্তনালীগুলো দুর্বল হয়ে যায়, যার ফলেও পাইলস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে

পাইলসের লক্ষণসমূহ

পাইলসের কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো-

মলত্যাগের সময় মলদ্বার থেকে রক্তক্ষরণ ,মলদ্বারের চারপাশে অস্বস্তি, ব্যথা এবং ফোলা, প্রচণ্ড চুলকানি, এক ধরনের পিচ্ছিল মিউকাস স্রাব নির্গত হওয়া এবং প্রায়শই অভ্যন্তরীণ পাইলসের ক্ষেত্রে মলত্যাগের পরে মনে হয় যেন পেট সম্পূর্ণ খালি হয়নি এই সমস্ত লক্ষণগুলি সাধারণত পাইলসের ক্ষেত্রে দেখা যায়






পাইলসের জন্য কিছু কার্যকরী হোমিওপ্যাথি ঔষধ

এখন দেখা যাক পাইলসের জন্য কিছু কার্যকরী হোমিওপ্যাথি ঔষধ সম্পর্কে জানি

     Aesculus Hippocastanum: ব্লাইন্ড পাইলসের ক্ষেত্রে অর্থাৎ যে পাইলসে রক্ত পড়ে না সেই ধরনের  পাইলসের ক্ষেত্রে Aesculus Hippocastanum খুব কার্যকর  তবে এই ধরনের পাইলসে তীব্র ব্যথা থাকে মলত্যাগের সময় মনে হয় মলদ্বারে  কিছু যেন আটকে আছে, এবং মলত্যাগের পরেও আরাম বোধ হয় না এছাড়া, কোমর বা পিঠে ভারী চাপ বোধের মতো একটা অনুভুতি থাকে



তাহলে কি কি পেলাম-  এই ধরনের পাইলসে ব্লিডিং হয় না, রেক্টামে শুষ্কতা ও ব্যাথা থাকে , ব্যাথা তীক্ষ্ণ বর্শা বেধানর মত থাকে আর এই ব্যাথা পিঠ পর্যন্ত অথবা থাই পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে কন্সটিপেশন তার সাথে মল বের হওয়া কঠিন মনে হয় মলদ্বার চুলকায় এবং জ্বালা করে

এই সমস্ত লক্ষন গুলি থাকলে Aesculus Hippocastanum অসুধটি ৩০ পটেন্সি অল্প জলে - ফোটা দিয়ে ২বার - দিন খাওয়া যেতে পারে তবে  কোনো পাস করা হোমিওপ্যাথের পরামর্শ নিতে হবে

এই অশুধের ২০০ পটেন্সি নেওয়া যেতে পারে তবে সেক্ষেত্রে এক কাপ জলে ফোটা মিসিয়ে তার থেকে চামচ খাওয়া যেতে পারে রোগের তিব্রতা এবং কত পুরাতন এসব কিছু বিস্লেশন করে কোন পটেন্সি নিতে হবে তা একমাত্র  একজন অভিজ্ঞ হোমিওপাথি ডাক্তার নির্ধারণ করতে পারে

পরের অসুধটি হল Nux Vomica পাইলসে তিব্র ব্যাথা থাকে, ফুলে যায় এবং রক্তক্ষরণ থাকে মলদ্বারে জ্বালা থাকে, চুলকায় এবং কখনও কখনও হুল ফোটানোর মত ব্যাথা থাকে রুগির কন্সটিপেশন থাকে , সে  বার বার পায়াখানা করতে যায় কিন্তু পায়াখানা পরিস্কার হয় না মশ্লাদার খাবার খাওয়ার পর, মদ্যপানের পর এবং যে নিস্ক্রিয় জীবনযাপন করে বা একি জায়গায় দীর্ঘক্ষণ বসে থাকে তাদের ক্ষেত্রে ব্যাথা বেদনা বাড়তে থাকে বা লক্ষনের বৃদ্ধি ঘটে মলত্যাগের পর মলদ্বারে খিলধরা ব্যাথা হয়

সকালের দিকে লক্ষণগুলির বৃদ্ধি ঘটে এছাড়া খাবার খাওয়ার পর এবং অত্যাধিক মানসিক চাপেও লক্ষণগুলি বাড়ে কফি , এলকোহল এবং রিচ ফূড খেলেও লক্ষণগুলি বেড়ে যায় ডায়রিয়ার এবং কোষ্ঠকাঠিন্য পর্যায়ক্রমে দেখা যায়

ক্রনিক এবং মৃদু লক্ষনের ক্ষেত্রে এই অসুধের ৩০ পটেন্সি দুই ফোটা সামান্য জলে মিসিয়ে দিনে - বার - দিন খাওয়া যেতে পারে স্পষ্টত লক্ষনগুলির সাথে মিল থাকলে সেক্ষেত্রে ২০০ পটেন্সি ফোটা হাফ কাপ জলে মিসিয়ে চামচ খাওয়া যেতে পারে দিনে ১বার - দিন

এরপর লক্ষণগুলি লক্ষ্য করুন এবং প্রয়োজন পড়লে একজন দক্ষ হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের পরামর্শ নিন

 Hamamelis Virginia- পরের অসুধটির নাম হল হ্যামামেলিস ভারজিনিয়া এর কমন নাম হল উইচ হ্যাজেল পাইলসের জন্য এটি একটি খুব ভাল অসুধ, বিশেষ করে যে পাইলসে রক্ত ক্ষরণ এবং ব্যাথা থাকে সেক্ষেত্রে খুবি ফলপ্রসূ একটি অসুধ

পাইলসের ক্ষেত্রে প্রচুর গাঁড় রক্ত বার হয় এবং রক্ত কিন্তু জমাট বাধা রক্ত নয় মলদ্বারে ব্যথা এবং কোমলতা থাকে বসা বা হাটাচলা করা খুবি দুষ্কর মলদ্বার পূর্ণ এবং ভারি অনুভুতি থাকে আক্রান্ত স্থানে তীক্ষ্ণ হুল ফোটান বা স্পন্দিত ব্যাথা থাকে

সামান্য পরিশ্রমের পরেই রক্তপাত সুরু হয় যেমন পায়াখানার পরেই রক্তপাত সুরু হয় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে, অতিরক্ত পরিশ্রম বা দৈহিক ক্রিয়াকলাপ করলে এবং দীর্ঘক্ষণ তাপের সংস্পর্শে থাকলে লক্ষঙ্গুলির বৃদ্ধি ঘটে

পাইলসের লক্ষনের সাথে সাথে যদি দেহের অন্য কোনো স্থানে  ভেরিকোজ ভেনের লক্ষন থাকে তবে হ্যামামেলিস ভারজিনিয়া খুবি সুইটেবল একটি অসুধ

লক্ষনের তিব্রতা  মৃদু বা মাঝারি থাকলে এই অসুধের ৩০ পটেন্সি  - ফোটা সামান্য জলে মিসিয়ে দিনে দুই থেকে বার - দিন খাওয়া যেতে পারে



 পাইলসের লক্ষনে পরের অসুধটি হল Aloe Socotrina

এক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান লক্ষণ হলো মলত্যাগের সময় বা পরে রক্তপাত হওয়া এছাড়া মলদ্বারের চারপাশে চুলকানি, জ্বালাপোড়া এবং ব্যথা হতে পারে মলদ্বারে গুটি থাকে  বা ফুলে ওঠে এবং তাতে খুব ব্যথা হতে পারে অনেক সময় মলত্যাগের পরও মনে হয় পেট সম্পূর্ণ খালি হয়নি মলদ্বারে ভিজে ভিজে অনুভূতি বা ডিসচার্জ হতে পারে, যা বেশ অস্বস্তিকর

AloeSocotrina পাইলসের ক্ষেত্রে একটি কার্যকর হোমিওপ্যাথি ওষুধ এটি বিশেষভাবে কার্যকর হয় যখন মলত্যাগের সময় মলদ্বারের ভেতরের অংশ বেরিয়ে আসে এবং তা আবার ভেতরে ফিরে যেতে কষ্ট হয় এই অবস্থায় তীব্র ব্যথা বা চাপ অনুভূত হতে পারে যদি মলদ্বার থেকে পিচ্ছিল স্রাব বের হয় এবং ঘন ঘন বাথরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হয়, তবে Aloe Socotrina বেশ উপকারী

এছাড়া, যদি ডায়রিয়ার মতো পাতলা মল হয় এবং এর সঙ্গে মলদ্বারের ব্যথা থাকে, এই ওষুধ তখনও ভালো ফল দেয় এছাড়া রেক্টামের চারপাস ফুলে গেলে এবং স্পর্শে ব্যথাযুক্ত মনে হলে অসুধটি খুবই কার্যকর

এই ওষুধটি সাধারণত 6C বা 30C পটেন্সি সামান্য জলে মিসিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার সেবন করা যেতে পারে তবে লক্ষণ কমে গেলে ওষুধের ফ্রিকোয়েন্সি কমানো উচিত

 আমরা শেষ যে অসুধটি নিয়ে আলোচনা করব তার নাম Collinsonia Canadensis এটি একটি অত্যন্ত কার্যকর হোমিওপ্যাথি ওষুধ এটি বিশেষত সেইসব ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যেখানে মলত্যাগের সময় দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অতিরিক্ত চাপের কারণে পাইলসের সমস্যা দেখা দিয়েছে যেসব রোগীর মলদ্বারে তীব্র ব্যথা সহ একটি গুটি থাকার অনুভূতি আছে এবং রক্তপাত দেখা হয় , তাদের জন্য এটি অত্যন্ত উপযোগী

CollinsoniaCanadensis বিশেষত গর্ভবতী মহিলাদের পাইলসের ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর, যেখানে গর্ভাবস্থায় পাইলসের সমস্যা দেখা দেয় এছাড়া, দীর্ঘ সময় বসে থাকা এবং একটি অলস জীবনযাত্রার ফলে সৃষ্ট পাইলসের ক্ষেত্রেও এই ওষুধ ভালো ফল দেয় এটি রক্তনালীগুলির অবস্থা উন্নত করে এবং মলদ্বারের চারপাশে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, ফলে ব্যথা এবং ফোলাভাব কমে

 এই ওষুধটি সাধারণত 6C বা 30C পটেন্সিতে দিনে - বার সেবন করা যায় লক্ষণ কমে গেলে ডোজের ফ্রিকোয়েন্সি কমানো উচিত তবে সঠিক চিকিৎসার জন্য একজন অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ

পাইলস প্রতিরোধে এবং চিকিৎসায় কিছু জীবনধারার পরিবর্তন প্রয়োজন বেশি তন্তুযুক্ত খাবার, যেমন শাকসবজি, ফল এবং গোটা শস্য খাওয়ার পরিমাণ বাড়ানো উচিত প্রচুর পানি পান করা এবং দৈনিক ব্যায়াম করার মাধ্যমে মল নরম রাখা যেতে পারে ধরনের পরিবর্তন পাইলসের সমস্যা কমাতে এবং পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধে সহায়ক


লাইফস্টাইল টিপস

পাইলসের চিকিৎসার পাশাপাশি কিছু জীবনধারা পরিবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া প্রয়োজন, যেমন ফলমূল, শাকসবজি এবং ওটস, যা কন্সটিপেশন প্রতিরোধে সহায়তা করে। প্রতিদিন ২-৩ লিটার জল পান করা উচিত, কারণ এতে মল নরম হয় এবং সহজে বের হতে সাহায্য করে। এছাড়া, নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করা উচিত, যা পেট ভালো রাখতে সহায়ক। দীর্ঘ সময় বসে থাকার অভ্যাস পরিহার করা এবং পায়াখানার সময় অতিরিক্ত কোথ দেওয়া থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন, কারণ এতেও পাইলসের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। এই সাধারণ পরিবর্তনগুলো দৈনন্দিন জীবনে অন্তর্ভুক্ত করলে পাইলস নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হবে।



উপসংহার

পাইলস একটি সাধারণ সমস্যা হলেও হোমিওপ্যাথি এর কার্যকর সমাধান দিতে পারে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা, সঠিক জীবনধারা এবং পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে পাইলস থেকে মুক্তি পেতে পারেন যদি আপনি পাইলসের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তবে একজন যোগ্য হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের পরামর্শ নিন পাইলস বা অন্য কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানাতে পারেন ধন্যবাদ!

Home   

Homeopathy Treatment for Prostate Gland

Check Prices of medicine in Amazon-----------

1.Colinsonia Canadensis         2. Aloe Socotrina     3. Hamamelis Virginica  4. Nux Vomica 5. Aesculus Hip



 

Post a Comment

0 Comments